আল আযকার বাংলা পিডিএফ বই ডাউনলোড | al azkar bangla pdf free download | ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (র)
Table of contents
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) তার অসাধারণ পাণ্ডিত্যের মাধ্যমে ইসলামিক জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বহু কালজয়ী গ্রন্থ রচনা করেছেন, যা যুগ যুগ ধরে মুসলিম উম্মাহর কাছে শ্রদ্ধার সঙ্গে অধ্যয়ন করা হচ্ছে। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং বহুল প্রশংসিত একটি গ্রন্থ হলো আল-আযকার। এই গ্রন্থটির পূর্ণ নাম: আল আযকারুল মুন্তাখাবাতু মিন কালামি সাইয়িদিল আবরার, যার অর্থ হলো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী থেকে নির্বাচিত দুআ, যিকির ও আমলসমূহ। গ্রন্থটির নাম থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, এটি মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা গুরুত্ববহ।
আল আযকার বই সম্পর্কিত তথ্য
বইয়ের নাম | আল আযকার |
লেখক | ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (র) |
প্রকাশনা | মাকতাবাতুস সুন্নাহ |
বইয়ের পৃষ্ঠা | ৯১১ |
বইটির পিডিএফ সাইজ | ৯৮ MB |
আল আযকার বইটি রচনার প্রেক্ষাপট
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বইটির ভূমিকায় উল্লেখ করেছেন যে, ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে বহু সালাফ ও আলেম হাদিসে বর্ণিত দুআ ও যিকিরের উপর বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। কিন্তু সেই গ্রন্থগুলোতে হাদিসের সনদসহ বর্ণনা এবং একই হাদিস বারবার উল্লেখ করার কারণে বইগুলো বেশ দীর্ঘ হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ পাঠকের জন্য সেগুলো থেকে উপকৃত হওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য তিনি সিদ্ধান্ত নেন, এমন একটি গ্রন্থ রচনা করবেন যেখানে কেবলমাত্র সহিহ হাদিসের আলোকে মানবজীবনের প্রতিটি ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় দুআ, যিকির ও আমলসমূহ স্থান পাবে এবং এই সংকলনটি সহজবোধ্য হবে।
আল-আযকার বইটি রচনার সময় ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) প্রধানত ইসলামের প্রসিদ্ধ এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য হাদিসের কিতাবগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি হাদিসের অন্যান্য নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে দুআ, যিকির ও আমলসমূহের উপর ভিত্তি করে সহিহ হাদিস সংগ্রহ করেছেন।
আল আযকার বইটির বিশেষত্ব
বইটি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রকাশের পর থেকেই ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে এবং এটি একটি সংক্ষিপ্ত, কিন্তু প্রামাণিক দুআ ও যিকিরের বিশ্বকোষে পরিণত হয়েছে। এটি এমন একটি গ্রন্থ যা একজন মুমিনকে প্রতিদিনের জীবনে কীভাবে সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে, সেই বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
আল-আযকার বইটির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা একে অনন্য করে তুলেছে:
১. লেখকের পাণ্ডিত্য ও মর্যাদা
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) ইসলামের ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ হাদিস বিশারদ ও মুজতাহিদ হিসেবে পরিচিত। তার লেখা বইগুলোতে তার গভীর জ্ঞান এবং সহিহ হাদিসের প্রতি অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। ইমাম নববীর মতো একজন বিশিষ্ট আলেমের লেখা হওয়ার কারণে বইটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
২. প্রতিটি জীবনের ধাপের জন্য দুআ ও যিকির
বইটিতে মানুষের জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত বিভিন্ন দুআ, যিকির ও আমল সংকলিত করা হয়েছে। যেমন, ঘুমানোর আগে এবং ঘুম থেকে ওঠার দুআ, খাওয়ার সময়ের দুআ, বাথরুমে প্রবেশ ও প্রস্থানের দুআ ইত্যাদি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে একজন মুসলিম তার প্রতিদিনের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহকে স্মরণ করার সুযোগ পান।
৩. সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত আমল
এই গ্রন্থে বর্ণিত প্রতিটি দুআ, যিকির ও আমল সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, যা ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর সহিহ হাদিস নির্বাচনের দক্ষতার পরিচায়ক। তিনি কোন দুর্বল বা অপ্রামাণিক হাদিস উল্লেখ করেননি, যা বইটিকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য করেছে।
৪. তাহকিকসহ হাদিসের উৎস
বইটিতে প্রতিটি দুআ, যিকির ও আমল বর্ণনার পর তাহকিক (হাদিসের সত্যতা যাচাই) করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, বিভিন্ন হাদিসের প্রসিদ্ধ কিতাব যেমন বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ ইত্যাদির রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে, যা বইটির বৈজ্ঞানিক মান নিশ্চিত করেছে।
৫. সরল অনুবাদ ও সঠিক উচ্চারণ
বইটির আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, প্রতিটি দুআ ও যিকিরের সরল বাংলা অনুবাদ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, সঠিক উচ্চারণের জন্য আরবি দুআগুলোতে হরকত সংযোজন করা হয়েছে, যা পাঠকদের সঠিকভাবে দুআ পাঠে সাহায্য করে।
৬. ফজিলত ও মাসআলা-মাসায়েল
দুআ ও যিকিরের ফজিলত এবং প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল বইটিতে সংযোজন করা হয়েছে, যা একজন পাঠককে এই দুআগুলো পড়ার উৎসাহ দেয় এবং ইসলামিক জীবনযাপনের নির্দেশিকা প্রদান করে।
৭. উন্নত মানের প্রকাশনা
আল-আযকার বইটির প্রকাশনা মানও অত্যন্ত উন্নত। এতে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত মানের হার্ডকভার, ডায়েরি বাইন্ডিং এবং রঙিন কাগজ, যা পাঠকের পড়ার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। বইটি দীর্ঘস্থায়ী এবং ব্যবহারযোগ্য হওয়ার জন্য উপযুক্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
উপসংহার
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর রচিত আল-আযকার কেবলমাত্র একটি দুআ ও যিকিরের সংকলন নয়; বরং এটি একজন মুসলিমের দৈনন্দিন জীবনের একটি পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। গ্রন্থটির প্রতিটি পৃষ্ঠা একজন মুমিনকে আল্লাহর স্মরণ করিয়ে দেয় এবং সুন্নাহ মাফিক জীবন যাপনে সহায়তা করে। তাই, এই গ্রন্থটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য অপরিহার্য একটি সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।